সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১২

ডিজিএফআইয়ের ‘রাজনৈতিক’ কার্যক্রম!

মিজানুর রহমান খান | তারিখ: ২৪-১২-২০১১

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিজিএফআইয়ের হস্তক্ষেপে ২০০৭ সালের ছাত্রবিক্ষোভ সংঘাতের দিকে গড়িয়েছিল তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিজিএফআইয়ের হস্তক্ষেপে ২০০৭ সালের ছাত্রবিক্ষোভ সংঘাতের দিকে গড়িয়েছিল
ডিজিএফআই একটি ওয়েবসাইট খুলেছে। এটি উন্মুক্ত সরকারের ধারণার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। ভারতের ‘র’ এবং পাকিস্তানের আইএসআইয়ের ওয়েবসাইট নেই। কিন্তু দেখার বিষয় হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএর ওয়েবসাইটে তার পরিচয়ের শুরুতেই বলেছে, ১৯৪৭ সালে রাষ্ট্রপতি ট্রুম্যানের জাতীয় নিরাপত্তা আইন স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে তার যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু আমাদের ডিজিএফআই এমন কোনো তথ্য দিতে পারেনি। কারণ তার জন্মবৃত্তান্ত সম্পর্কে বড় মুখ করে বলার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশে স্বৈরাচারের জন্ম শীর্ষক বইয়ে জেনারেল জিয়া কী করে আইএসআই মডেলে ডিজিএফআই গড়েছিলেন সেই তথ্য কেউ এখনো খণ্ডন করেননি। তবে এরপর শেখ হাসিনা তাঁর দুই মেয়াদে এই প্রতিষ্ঠানের পেশাদারি দক্ষতা বাড়াতে কী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, আর তাতে কী সাফল্য এসেছে, সে বিষয়ে আমরা কিছুই জানতে পারি না।
সবশেষে রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বাধীন সংসদীয় কমিটি ডিজিএফআইয়ের ‘রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ’ বন্ধে সুপারিশ করলেন। এ থেকে বুঝতে পারি, এই প্রতিষ্ঠানটি অন্তত এই ক্ষেত্রে যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই আছে।
ডিজিএফআইয়ের ওয়েবসাইটটি তাদের কার্যক্রমের সীমারেখা নির্দেশ করে না। এতে লেখা, ‘এই ওয়েবসাইটে এই সংগঠনের বিষয়ে আপনি জানতে পারবেন।’ কিন্তু কোন আইন বা কত তারিখের কেমন নির্বাহী আদেশ বলে এর জন্ম হলো সে বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।
তবে এর কার্যক্রমের সুনির্দিষ্ট কোনো সীমা নেই বলে আমরা যে এতদিন শুনে আসছিলাম, সেই ধারণা আমাদের আরও বদ্ধমূল হলো ওয়েবসাইটটি দেখে। ডিজিএফআই তার সম্পর্কে বলেছে, তারা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শীর্ষসংস্থার গোয়েন্দা ও সংগঠন। এর প্রাথমিক ভূমিকা হলো, সশস্ত্র বাহিনী এবং জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে প্রয়োজনীয় গোয়েন্দা সহায়তা দেওয়া।
এখানে আমরা লক্ষ করব, জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ কথাটি কিন্তু উল্লেখ করা হয়নি। এবং এর অনুল্লেখ আমাদের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ ও সুচিন্তিত মনে হয়। এতে বলা আছে, ‘আপনি সামরিক এবং আধাসামরিক বাহিনীগুলো সম্পর্কিত যেকোনো ইস্যুতে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন।’ ‘যে কোনো ইস্যু’ কথাটি যথেষ্ট ব্যাপক। আবার বলা হয়েছে, ‘কিংবা ডিজিএফআই কার্যক্রমের জন্য কিছু উপকার হতে পারে—এমন কোনো তথ্যের বিষয়েও যোগাযোগ করতে পারবেন।’ এখন ডিজিএফআই কার্যক্রম কী কী সেটা যদি জনগণের কাছে স্পষ্ট না করা হয়, তাহলে তারা কোনটা রেখে কোনটার বিষয়ে যোগাযোগ করবেন। ওয়েবসাইট বলেছে, আপনি যদি কোনো সমস্যায় পড়েন তাহলেও ডিজিএফআইয়ের কাছে যেকোনো সহায়তা চাইতে পারেন। দেশের মানুষের সমস্যা অন্তহীন। দলাদলি, প্রভাব বিস্তার, জমি দখল, দুর্নীতি, মাস্তানির মতো সমস্যারও প্রতিকার দিতে পারে ডিজিএফআই? বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের শীর্ষ জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা জাতীয় নিরাপত্তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মধ্যে তাদের কার্যক্রম সীমিত রাখে।
রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে সংসদীয় কমিটি ২০০৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-সেনা সংঘর্ষের বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে ডিজিএফআইয়ের জবাবদিহিতার প্রশ্নটি সামনে আনায় তাদের ধন্যবাদ। ২০০৯ সালে আমরা এই কলামে লিখেছিলাম, ডিজিএফআইকে আইন ও সংসদীয় নিয়ন্ত্রণে আনুন। তবে ডিজিএফআই বা গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আড়ালে-আবডালে তাদের সঙ্গে বিশেষ যোগাযোগ রাখার সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারিনি। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সম্ভবত এবারই প্রথম কোনো সংসদীয় কমিটি নির্দিষ্টভাবে ডিজিএফআইয়ের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধে সুপারিশ করেছে। তারা এবারই প্রথম সেনাপ্রধান ও সরকারপ্রধানের জবাবদিহিতাও একপ্রকার নিশ্চিত করেছে। কমিটির সামনে সশরীরে না হলেও তাঁরা দুজনে যথাক্রমে টেলিকনফারেন্স ও ই-মেইলের মাধ্যমে কৈফিয়ত দিয়েছেন।
রাশেদ খান মেননের সঙ্গে আমি ২২ ডিসেম্বর টেলিফোনে কথা বলি। বেনজির ভুট্টোর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর গঠিত আসিফ জারদারির নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এসেই আইএসআইয়ের রাজনৈতিক সেল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। সেই ঘোষণার পর আমরা লিখেছিলাম, এখন তবে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া হোক। বাংলাদেশের ডিজিএফআইয়ের রাজনৈতিক সেল বন্ধ করা হোক। আমরা এর কোনো সাড়াশব্দ পাইনি। তাই মেননকে বললাম, আপনারা কি নিশ্চিত ডিজিএফআইয়ের রাজনৈতিক সেল রয়েছে এবং সেটা এখনো সচল-সক্রিয়। এর উত্তরে তিনি বললেন, ‘আমি যখন এই তদন্ত প্রতিবেদনের খসড়া তৈরি করেছিলাম, তখন রাজনৈতিক সেল কথাটি ব্যবহার করেছিলাম।’ পরে মনে হলো এ বিষয়ক কার্যক্রম তারা কীভাবে চালিয়ে থাকে, পলিটিক্যাল সেল নামে কিছু আছে কি না, তা আমার জানা নেই। তাই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধের কথাটি উল্লেখ করেছি।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ডিজিএফআই উপদেষ্টা পরিষদ মানে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত পাল্টে দিয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ ছাত্র-শিক্ষকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার অবসান চেয়েছিল। সে মতে কার্যবিবরণীও লেখা হয়েছিল। কিন্তু ডিজিএফআই তা বদলে দেয়। এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে প্রধান উপদেষ্টা কী কারণে অভিযুক্ত হয়েছেন সেটা এক প্রশ্ন। আমরা তদন্ত প্রতিবেদনের পূর্ণ প্রকাশের অপেক্ষায় রইলাম। আগামী মাসে সংসদের প্রথম অধিবেশনে ওই প্রতিবেদন পেশ করা হবে। আমরা এটুকু বুঝি, নীতিগতভাবে ডিজিএফআইয়ের জবাবদিহিতার প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে বিবেচ্য হতে পারে না। ডিজিএফআইয়ের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধের বিষয়টি একান্তভাবেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এখতিয়ারভুক্ত বিষয়। কিন্তু তারা পুতুলের মতো নির্বাক।
বৃহস্পতিবার কথা হলো সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান ও জাতীয় সংসদে প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমানের (অব.) সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থার জবাবদিহিতার প্রশ্ন আমরা কমিটিতে আলোচনা করেছি।’ কিন্তু তাঁকে যখন প্রশ্ন করি, ডিজিএফআইয়ের কোনো চার্টার রয়েছে কি না। তখন তিনি বলেন, এ বিষয়ে তাঁর স্পষ্ট কোনো ধারণা নেই। ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের কার্যপরিধি ও তাদের বাজেট নিয়ে কমিটিতে কখনো আলোচনা হয়নি।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বদলে দেওয়ার মতো হিম্মত ডিজিএফআই কোথা থেকে পেল। এটা কি হঠাৎ করেই তদন্ত প্রতিবেদনের অভিযুক্ত দু-তিনজন কর্মকর্তা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন? নাকি প্রতিষ্ঠানগতভাবে তারা সেটা করতে পেরেছিলেন? ওয়ান ইলিভেনের পর দেশ চালানো, মাইনাস টু ফরমুলার বাস্তবায়ন প্রয়াস, কিংন্স পার্টি গঠন, রাজনৈতিক দলগুলোকে সংস্কারে বাধ্য করার মতো কার্যক্রমে ডিজিএফআই যে শক্তি ও সামর্থ্য দেখাল তার ভিত্তি কী? এটা তো আকাশ থেকেও পড়েনি, রাতারাতিও সৃষ্টি হয়নি। এটা তারা শুধু বন্দুকের নল থেকে আহরণ করেনি। এ জন্য প্রধানত দায়ী ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতার লিপ্সা। দলের গণতন্ত্রায়ন ও সমাজের শ্রদ্ধাভাজন নেতৃত্ব তৈরি না করায় সমাজে একটা শূন্যতা সৃষ্টি হয়। সেই শূন্যতা পূরণ করে সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত ডিজিএফআই। এই সংস্থার সব বড় বড় পদ সামরিক বাহিনীর দখলে থাকে। ডিজিএফআইয়ের ওয়েবসাইটই বলছে, ‘এই সংগঠনটি লে. জেনারেল/মেজর জেনারেল পদমর্যাদায় মহাপরিচালকের নেতৃত্বাধীন। মহাপরিচালক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি দায়বদ্ধ। ডিজিএফআইয়ের বিভিন্ন ব্যুরোগুলোর প্রধান হিসেবে আছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও সমপদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিরা। সারা দেশে এই সংস্থার ১৯টি দপ্তর রয়েছে। এগুলোকে বলে ডিটাসমেন্টস। এগুলোর প্রধান কর্নেল ও লেফটেন্যান্ট পদমর্যাদার।’ সুতরাং বেসামরিক কর্মকর্তারা এই সংস্থায় অনেকটাই অপাঙতেয়। এটাও এক ধরনের ছদ্মবেশী অনানুষ্ঠানিক সেনাশাসন, যার নেতৃত্ব দেন ও ফায়দা লোটেন বেসামরিক লেবাসের সরকারপ্রধান। সংসদের কাছে তারা এর জবাবদিহি করতে ভীরু। মেনন কমিটির রিপোর্ট নিয়ে সংসদে মুক্ত আলোচনা হয় কি না সন্দেহ। যদি আলোচনা চলেও তাহলে আমরা হয়তো দেখব ক্ষমতায় না থাকা ‘দুই উদ্দিনের’ বিরুদ্ধে গলাবাজিটাই প্রাধান্য পাচ্ছে। বর্তমানকে চাপা দিয়ে ডিজিএফআইয়ের অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি হচ্ছে।
সুতরাং ডিজিএফআই বা এনএসআই বলে নয়, কোর্ট-কাছারিরও যদি আমরা সংস্কার চাই, তাহলে যার যা ভূমিকা তাকে তাই করতে দিতে হবে। কোনো একটি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে তাকেই আবার সুযোগ বুঝে গালমন্দ করার শঠতাপূর্ণ রাজনীতি পরিহার করতে হবে।
জরুরি অবস্থায় বিএনপির দুজন সংস্কারপন্থীর নেতা ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক গোলাম মহম্মদ এবং পরিচালক এ টি এম আমিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তাঁদের বলা হয়েছিল, ২০০৮ সালের যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে তাতে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন মূল বিএনপি যদি বয়কট করে তাহলেও যেন সংস্কারপন্থীরা অংশ নেয়। কারণ তারা দেখতে চায়, নির্বাচিতদের অধিকাংশই যেন ডিজিএফআই যেভাবে দেশ চালাতে চায়, তারা যেন সেটা সমর্থন করে। এ থেকে পরিষ্কার, ডিজিএফআই আশা করেছিল, দেশে একটি রাজনৈতিক সরকার আসছে। একটি পার্লামেন্ট থাকবে কিন্তু তাদের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কমবে তো নয়ই বরং তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে। ডিজিএফআইয়ের এই ভূমিকা বাংলাদেশে পরিত্যক্ত হয়েছে, নাকি তা আবার ফিরে আসবে?
ডিজিএফআই তার ওয়েবসাইটে জনগণের সেবক হতে চেয়েছে। কিন্তু এই অবস্থাটি কি বদলে গেছে? ৩ জুলাই ২০০৮ তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি এক বার্তায় উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ডিজিএফআইকে এতটাই ভয় পায় যে তারা অনেকেই এমনকি ঘরোয়া আলোচনায়ও প্রকাশ্যে তাদের নাম উচ্চারণ করে না। ইঙ্গিতপূর্ণভাবে শক্তি বা অদৃশ্য শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে।’ গীতা পাসি উল্লেখ করেছিলেন, প্রবাসী শ্রমিকেরা শান্তি রক্ষায় নিয়োজিত সৈনিকদের চেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনে। একটি টিভি চ্যানেলে এই বক্তব্য প্রদানকারীকে অপসারণ করতে ডিজিএফআই বাধ্য করেছিল। সেই ডিজিএফআই কি হাতমুখ ধুয়ে ঘরে উঠে গেছে?
ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের মহাপরিচালককে যেভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি জবাবদিহি করতে হয়, তেমনটা তিন বাহিনী প্রধান সম্পর্কেও খাটে না। সে কারণে ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের দায়িত্ব-কর্তব্য, তাদের বাজেট, তাদের জবাবদিহিতা-সংক্রান্ত যেকোনো প্রশ্নের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রীদের জবাবদিহিতার প্রশ্ন ওতপ্রতোভাবে জড়িত। এই সংস্থার জবাবদিহির প্রশ্নটি আরও ব্যাপক ও প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে যখন আমরা জানতে পারি যে র‌্যাব কার্যক্রমের সঙ্গে অনেক বিষয়ে তাদের যৌথ কাজ রয়েছে। ওয়েবসাইট বলেছে, ‘ডিজিএফআইয়ের কতিপয় ব্যুরো র‌্যাবসহ সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং গোয়েন্দা সংগঠনগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে থাকে।’ কিন্তু এটা তো তার করার কথা নয়। সাম্প্রতিককালে র‌্যাবের বিরুদ্ধে গুম, গুপ্তহত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
আইএসআইয়ের রাজনৈতিক সেল আসলে বন্ধ হয়নি। জারদারি তার কথা রক্ষা করতে পারেননি। গত মে মাসে পাকিস্তানি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক বলেন, ‘আইএসআই এখনো যেমন নয়, তেমনি তারা কখনো রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না।’ এর দুদিন পর প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি একই সুরে বললেন, ‘আইএসআই সরকারের সম্মতি ছাড়া একেবারে কিছুই করেনি। এবং তারা “জাতীয় স্বার্থের” বিরোধী কিছুর সঙ্গে জড়িত নয়।’ বাংলাদেশেও মেননের সুপারিশ হিমাগারে যাবে। আর আমরাও এ রকমের বক্তব্য শুনলে অবাক হব না। কোনো সামরিক শাসক নয়, ১৯৭৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জুলফিকার আলী ভুট্টো আইএসআইয়ের রাজনৈতিক সেল খুলেছিলেন।
প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশে কি রাজনৈতিক সেল নেই? কে এর জবাব দেবে?
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
mrkhanbd@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন